| |
               

মূল পাতা রাজনীতি মহাযাত্রা শুরুর ঘোষণা মির্জা ফখরুলের, ওবায়দুল কাদের বললেন ‘দাঁড়াতে দিবো না’


মহাযাত্রা শুরুর ঘোষণা মির্জা ফখরুলের, ওবায়দুল কাদের বললেন ‘দাঁড়াতে দিবো না’


রহমত নিউজ ডেস্ক     19 October, 2023     10:22 AM    


ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওই সমাবেশ থেকেই তাদের মহাযাত্রা শুরু হবে এবং সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা আর থামবেন না। বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির এক সমাবেশ থেকে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ থেকেই সরকার বিরোধী চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি ।

ওদিকে প্রায় একই সময়ে ঢাকায় সমাবেশ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেই সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি অবরোধ করবে, আমরাও পাল্টা অবরোধ করবো। দাঁড়াতে দিবো না। পশ্চিমারা নাকি বিএনপিকে উৎসাহ দিচ্ছে কিন্তু তাদের চারপাশেই এখন অশান্তির আগুন। তবে নির্বাচনে যারা বাধা দেয় তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয় সেটা আমরাও দেখতে চাই।

ঢাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কারণে শহরজুড়ে প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয় এবং এজন্য বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ সময় যানজটে পড়ে দুর্ভোগে পোহাতে হয়েছে মানুষকে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আয়োজনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, নভেম্বর মাসেই ওই নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং জানুয়ারির শুরুর দিকে নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে। ওদিকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যারাই বাধা হবে তাদের জন্য ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।

যা বললেন মির্জা ফখরুল
২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল করার আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওই দিনের পর থেকে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তার আর থেমে থাকবেন না। অনেক বাধা বিপত্তি আসবে। সেটা মোকাবেলা করেই আমাদের ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাবো আমরা। যুগপৎভাবেই সব রাজনৈতিক দল এ কর্মসূচি পালন করবে। সরকার যদি নিজে থেকে না সরে তাহলে রাজপথে ফয়সালা হবে।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গা থেকে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মিছিল সহকারে এ সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। বিএনপি নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী মাসে নির্বাচনের তফসিলকে কেন্দ্র করেই ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ থেকে ঢাকা অবরোধ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়,সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়টি দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, নতুন নতুন উদ্বোধন করে আর প্রস্তরখণ্ড লাগায়। কিন্তু ওটা দিয়ে লাভ হবে না। মানুষ এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে সরকার সরকার কাঁপতে শুরু করেছে। এখনো সময় আছে মানে মানে পদত্যাগ করে কেটে পড়ুন। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বুধবারের এ সমাবেশকে সামনে রেখে তার দলের অন্তত আড়াইশো নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। আমরা যারা নির্বাচন করতে পারি তাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য সাজা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু মামলা-হামলা দিয়ে আর পার পাওয়া যাবেনা এটা যত সহজে বুঝবে, তাহলেই এ সরকার একটি সেফ এক্সিটের পথ পেতে পারে। দেশের রাষ্ট্রপতি বিদেশে গিয়েছেন কিন্তু কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাননি। এভাবে চলতে পারে না। ২০১৪ সালে আমাদের নির্বাচন করতে দেয়নি। ২০১৮ সালেও করতে দেয়নি। রাতের অন্ধকারে ভোট করে নিয়ে গেছে। এবার আবার জোরেশোরে ঢোল পিটিয়ে শুরু করেছে। কিন্তু এ সরকার আসলে নাই, এ সরকার টিকবে না।

যা বললেন ওবায়দুল কাদের
বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের’ আয়োজন করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। ওই সমাবেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে গেছে এবং ওটা আর কখনোই ফিরে আসবে না। শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থেকেই নির্বাচন দেবেন এবং ভোটে আবার তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। এর কোন ব্যত্যয় হবে না।'

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নিয়ম অনুযায়ী, সেই সময়ে সরকারের বড় সিদ্ধান্ত, বদলি বা পদায়নে নির্বাচন কমিশনের মতামত নিতে হবে, যদিও অতীতে তার ব্যত্যয় দেখা গেছে। বিএনপি আগেই বলেছে,  শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন তারা মেনে নেবেন না।

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আপনি শেষ বার্তা দিয়েছেন, আমিও বার্তা দিচ্ছি- আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আবারও তিনি ক্ষমতায় বসবেন। এর অন্যথা বা ব্যত্যয় হবে না। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন না। এটাই আমাদের শেষ বার্তা”।

যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পশ্চিমারা নাকি উৎসাহ দিচ্ছে। ফখরুল সাহেব (বিএনপি মহাসচিব) দুনিয়ার অবস্থা ভালো না। যাদের কথা বলছেন তাদের চারপাশে অশান্তির আগুন। এ আগুন সামাল দিতে পারছে না। তারা ঘর সামলাবে নাকি এখানে এসে আপনাকে উৎসাহ দিবে। উৎসাহ দেয়ার দিন চলে গেছে”।

বিএনপির সরকার পতনের সম্ভাব্য কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা অবরোধ করবে। আমরাও পাল্টা অবরোধ করবো । দাঁড়াতে দিবো না। যারা বলেছেন শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে হবে। তাদেরকে বলতে চাই যে যারা সেই নির্বাচনে বাধা দিবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। অবরোধ যারা করবে, ঢাকা অচল করবে যারা- তারাই নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা (পশ্চিমা দেশগুলো) কী ব্যবস্থা নেয় আমরা দেখবো।